মৌজায় জমি: খতিয়ান ও দাগ নম্বর বোঝার সহজ গাইড
মৌজায় জমি, দাগ নম্বর ও খতিয়ানের সম্পর্ক বোঝা ভূমি মালিকানার ধারাবাহিকতা জানতে সহায়ক। এই নিবন্ধে মৌজাভিত্তিক খতিয়ানের মূল উপাদানগুলি সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
মৌজায় জমির গুরুত্ব
প্রত্যেকটি এলাকায় বা প্রত্যেক মৌজায় জমি পরিমাপের জন্য একটি নির্দিষ্ট মানচিত্র থাকে এবং সেখানে প্রতিটি দাগের আলাদা নম্বর নির্ধারিত থাকে। প্রত্যেক মৌজায়, প্রত্যেক প্রজার এক বা ততোধিক ভূমির জন্য যে রেকর্ড তৈরি হয় তাকে খতিয়ান বলা হয়—ভূমি জরিপের মাধ্যমে এই খতিয়ান তৈরি করা হয় এবং ক্রমিক সংখ্যায় সাজানো থাকে। এই সংখ্যাকে আমরা খতিয়ান নম্বর বলে থাকি।
একটি খতিয়ানে যা থাকে
মৌজা অনুযায়ী খতিয়ান তৈরি হওয়ার কারণেই জমির প্রকৃত মালিকানা, দাগ নম্বর ও জমির শ্রেণী সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। একটি খতিয়ানে সাধারণত নিচের বিষয়গুলো উল্লেখ থাকে:
- খতিয়ানের ক্রমিক নম্বর বা খতিয়ান নম্বর
- জমির মালিকের নাম এবং পিতা বা স্বামীর নাম
- মালিকের অংশ বা মালিকের মোট জমির পরিমাণ
- দাগ নম্বর এবং যে দাগে জমিটি অবস্থিত
- উক্ত দাগে জমির শ্রেণী—নাল, উঁচু জমি, বসতবাড়ি ইত্যাদি
- উক্ত দাগে মোট জমির পরিমাণ
- মোট জমির মধ্যে উক্ত খতিয়ানের অংশ
- রাজস্ব প্রদেয় অবস্থার বিবরণ
- জেলার নাম বা যে জেলায় জমিটি অবস্থিত
- থানা বা উপজেলার নাম
- জে এল নম্বর (Jurisdiction List)
- তৌজি নম্বর
মালিকানা ধারাবাহিকতা জানা কেন জরুরি
মূলত আমরা খতিয়ান বলতে ভূমি মালিকানার বিবরণকেই বুঝি। তাই সাবেক খতিয়ান এবং বর্তমান খতিয়ান পর্যালোচনা করলেই আমরা ভূমি মালিকানার ধারাবাহিকতা স্পষ্টভাবে জানতে পারি। খতিয়ান থেকেই বোঝা যায় কোন সময়ে কে উক্ত ভূমির মালিক ছিলেন এবং বর্তমানে কার নামে জমিটি রয়েছে।
মৌজাভিত্তিক এই তথ্য যাচাই করে খতিয়ানের দাগ নম্বর ও জমির অবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। ফলে জমি কেনাবেচা, উত্তরাধিকার এবং ভূমি সংক্রান্ত আইনি সমস্যাগুলোর সমাধানে মৌজার খতিয়ান অপরিহার্য দলিল হিসেবে কাজ করে।